আশ্চর্য সুন্দর এক রঙিন পাখি হামিং বার্ড। পৃথিবীর সবথেকে ছোট পাখি হল এই হামিং বার্ড। পৃথিবীতে এর তিনশত এর বেশি প্রজাতি পাওয়া যায়। তবে উত্তর ও দক্ষিন আমেরিকা ছাড়া অন্য মহাদেশে এদের দেখা যায় না।
ইংরেজী
Humming অর্থ
গুনগুন করা। ছোট এ পাখি যখন প্রচন্ড গতিতে পাখা নাড়ে তখন গুনগুন শব্দ হয়, এজন্য এ পাখিকে হামিং বার্ড বলা হয়। এদের স্বভাবে রয়েছে নানা বৈশিষ্ট্য।
পৃথিবীর সবথেকে ছোট প্রজাতির হমিং বার্ড পাওয়া যায় কিউবায়। দুই গ্রামের কম ওজন এবং
আড়াই ইঞ্চির কম লম্বাকৃতির এই পাখির ডিমের আকৃতি মটরের দানার মত। সবচেয়ে বড় প্রজাতির
হামিং বার্ডকে জায়ান্ট হামিং বার্ড বলা হয়, যারা লম্বায়
মাত্র আট ইঞ্চি এবং ওজনে ১৮ থেকে ২০ গ্রাম হয়ে থাকে।
এদের পুরুষ ও স্ত্রী প্রজাতির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। পুরুষ পাখির লোম সবুজ রংয়ের হয়
এবং পাখার উপরের দিক নীল বর্নের আর নিচের দিকটা ধূসর সাদা বর্ণের হয়। অপরদিকে স্ত্রী পাখির
গায়ের রং নীলচে সবুজ হয় এবং
লেজে
সাদা ফোটা দাগ থাকে। হামিং বার্ডের দুইটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল এরা একটানা বহুদিন না খেয়ে
থাকতে পারে এবং এরা কোথাও না থেমে হাজার মাইল পাড়ি দিতে পারে। এর রহস্য হিসেবে বিজ্ঞানীরা
জানান, হামিং বার্ড সেকেন্ডে ১২ থেকে ৯০ বার পাখা
ঝাপ্টাতে পারে। অন্যান্য পাখিরা ডানা মেলে শুধুমাত্র সামনের দিকে উড়তে পারে। কিন্তু হামিং বার্ড
সামনে পিছনে, ডানে বামে, উপরে নিচে সব দিকে উড়ে যেতে পারে। এদের এরুপ উড়ার রহস্য লুকিয়ে
আছে এর ডানার গঠন, কাঁধের জোর এবং অতি শক্তিশালী পেশীর মাঝে।
এরা এত দ্রুত উড়তে পারলেও
অন্যান্য
পাখির মত এরা হাঁটতে পারে না এবং বেশি সময় দাড়িয়েও থাকতে পারে না।
খাবার দাবারের বেলাতেও এই পাখি বেশ বিলাসী। এদের প্রধান খাদ্য মধু। হামিং বার্ডদিনে প্রায় ১৫০০
ফুল থেকে মধু আহরন করে। মধু খাওয়ার সময় এরা ফুল থেকে নিজের দূরত্ব বজায় রাখে এবং শূন্যে ভাসমান
অবস্থায় মধু সংগ্রহ করে। লাল
রংয়ের
ফুলই এদের পছন্দনীয়। কিছু পাখি পোকা মাকড়ও খাবার হিসেবে গ্রহন করে।
হামিং বার্ড ছোট হলেও অনেক সাহসী পাখি। নিজেদের এলাকা রক্ষা করার জন্য বড় পাখিদেরও তোয়াক্কা করে না বরং তাদের তাড়িয়ে দেয়। বিপদে কর্কশ আওয়াজের মাধ্যমে নিজেদের রক্ষা করে।
No comments:
Post a Comment