Sunday, October 21, 2018

ইসলামে অতিথিসেবা


ইসলামে অতিথিসেবার প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। মেহমানদারির সঙ্গে ইমানদারির বিশেষ সম্পর্ক আছে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০১৮; মুসলিম, হাদিস : ৪৮)
খাবার শেষ হলে মেহমানের কোনো কাজ না থাকলে চলে যাবে। অহেতুক বসে থেকে মেজবানের কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে না। মহানবী (সা.)-এর এক ঘটনা বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘খাওয়াদাওয়া শেষে তোমরা চলে যাও। তোমরা কথাবার্তায় মশগুল হয়ে পড়ো না। কারণ তোমাদের এই আচরণ নবীকে পীড়া দেয়। সে তোমাদের উঠিয়ে দিতে সংকোচ বোধ করে।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৩)
মেহমানের উচিত হলো দীর্ঘ সময় বা দীর্ঘদিন অবস্থান করে মেজবানকে বিরক্ত না করা। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে। মেহমানের পারিতোষিক (বিশেষ মেহমানদারি) এক দিন ও এক রাত। (স্বাভাবিক) মেহমানদারি তিন দিন। এর অতিরিক্ত মেহমানদারি সদকাস্বরূপ। মেহমানের জন্য বৈধ নয় যে সে মেহমান হতে হতে মেজবানকে বিরক্ত করে ফেলবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১৩৫; মুসলিম, হাদিস : ৪৮)

ইসলামে অতিথি আপ্যায়নের গুরুত্ব অত্যধিক। অথিতি আপ্যায়নের ব্যাপারে ইসলাম তার অনুসারীদের ব্যাপকভাবে উৎসাহিত উদ্বুদ্ধ করেছে। এর মধ্যে দুনিয়া আখেরাতের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। বাড়িতে মেহমান তথা কোনো অতিথি আগমন করলে প্রিয় নবী (সা.) এবং তাঁর সাহাবিরা অত্যন্ত খুশি হতেন এবং সাধ্যমতো আপ্যায়ন করতেন। নিজে না খেয়ে মেহমানকে তুষ্টি সহকার খাইয়েছেন। নবী-রাসুল ও সাহাবায়ে কেরামদের জীবনে এমন দৃষ্টান্ত অসংখ্য। কারও বাড়িতে মেহমান উপস্থিত হলে অধিবাসীদের উচিত অসন্তুষ্ট না হয়ে আল্লাহতাআলার মহান দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করা। পাশাপাশি মেহমান বা অতিথির সঙ্গে সুন্দর আচরণ এবং আপ্যায়নের প্রাণপণ চেষ্টা করা। প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেছেন, মেহমানদের ঘৃণা করো না। কেননা যে মেহমানকে ঘৃণা করল, সে আল্লাহকে ঘৃণা করল। আর যে আল্লাহকে ঘৃণা করল, আল্লাহ তাকে ঘৃণা করেন।

প্রিয় নবী (সা.) আরও এরশাদ করেছেন, যার মধ্যে অতিথিপরায়ণতা নেই, তার মধ্যে কোনো কল্যাণই নেই। ইসলামের মধ্যে যত ধরনের উত্তম কাজ আছে, তার মধ্যে অতিথি আপ্যায়ন অন্যতম। প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তাঁর মেহমানকে সম্মান করে (বোখারি ও মুসলিম)।

No comments:

Post a Comment

ভুলোমনা কাজী মোতাহার হোসেন

কাজী নজরুল ইসলাম ঢাকায় আসেন। থাকবেন কোথায়, আড্ডায়ই–বা জমবে কোনখানে? কেন, কাজী মোতাহার হোসেন আছেন না! দিনভর আড্ডা চলে কবি আর শিক্ষকে। সঙ্গে দ...