ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে হুমায়ূন আহমেদ তখন আমেরিকায়। অসুস্থতার কথা ভুলে থাকার জন্য নিজেকে ব্যাস্ত রাখছেন। ওই উদ্দেশ্যে প্রচুর বই জোগাড় করলেন।
আমেরিকায় যে বাড়িতে উঠেছিলেন তার পাশেই একটি পাবলিক লাইব্রেরি ছিল, তিনি ওই লাইব্রেরির মেম্বারও হলেন। মেম্বার হয়ে হুমায়ূন আহমেদ মোটামুটি অবাক হলেন। তিনি দেখলেন বিদেশী লেখকদের বইয়ের থাকে তার নিজের লেখা অনেক বই!
হুমায়ূন আহমেদ কৌতুক করে লাইব্রেরিয়ানকে বললেন- আরে, এ বইগুলোতো আমার প্রিয় লেখকের বই!
লাইব্রেরিয়ান বললেন- তুমি যেহেতু মেম্বার হয়েছো, চাইলেই এই লেখকের একটি বই নিয়ে পড়তে পার। হুমায়ূন আহমদ তখন তার নিজের লেখা হিমুর একটি বই ইস্যু করে নিয়ে এলেন।
চট্টগ্রামের বক্সিরহাটে ডঃ ইউনূসের বাবার স্বর্ণের দোকান। দোকানের উপরের তলায় বাসা। ডঃ ইউনূসের দাদাও এই পেশাতেই ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবে সংসারে অভাব চলছে। সন্তানদের লেখাপড়ার খবর নেওয়ার সাধ্য ডঃ ইউনূসের বাবার ছিল না। তাই পড়ার খোড়াক জোগাতে নিজস্ব কৌশল উদ্ভাবন করতে হত তাকে। বই ধার থেকে শুরু করে বই চুরি পর্যন্ত করতে হয়েছে তাকে পড়ার খোড়াক জোগাড়ের জন্য।
তখনকার আমলে কলকাতা থেকে প্রকাশিত শুকতারা পত্রিকাটি ছিল শিশুদের সবচেয়ে পছন্দের। পত্রিকায় নিয়মিত একটি প্রতিযোগীতা হতো, বিজয়ীদের নাম ঠিকানা পত্রিকার পরবর্তী সংখ্যায় প্রকাশ করা হত। নিয়ম ছিল এই প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হলে ফ্রি পত্রিকার গ্রাহক হওয়া যায়।
ডঃ ইউনূস প্রতিযোগীতায় অংশ নিতেন না যার ফলে বিজয়ী হয়ে ফ্রি পত্রিকাও পেতেন না। তবে তিনি ফ্রি পত্রিকা পাওয়ার কৌশল অবলম্বন করলেন। বিজয়ী প্রতিযোগীদের যেই নাম প্রকাশিত হতো তার মধ্যে একজনের নাম বেছে নিয়ে একদিন সম্পাদককে লিখলেন-
'মাননীয় সম্পাদক,
আমি অমুক, একজন বিজয়ী প্রতিযোগী, আমাদের বাসা বদলানো হয়েছে, তাই আমাদের
ঠিকানা পরিবর্তন হয়েছে। এখন থেকে আমার নির্ধারিত ফ্রি পত্রিকার কপিটি
ডাকযোগে বক্সিরহাটে পাঠালে বাধিত হব। বাড়ির নাম্বার হলো....'
ড. ইউনুস এরপর থেকে নিয়মিত ফ্রি পত্রিকার কপি পেতেন। এবং প্রিয় শিশুতোষ পত্রিকা পাঠের মাধ্যমে জ্ঞান তৃষ্ণা মেটাতেন ।
source: rokomari.com